ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে একটি বড় আইনি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, যেখানে কোম্পানিটিকে ইচ্ছাকৃতভাবে অ্যাসবেস্টস দ্বারা দূষিত বেবি পাউডার বিক্রির অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই মামলায় ৩,০০০ জন মানুষ যুক্ত রয়েছেন এবং এটি বিবিসির হাতে পাওয়া কোম্পানির অভ্যন্তরীণ মেমো ও বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদনগুলোর উপর ভিত্তি করে গঠিত।
কেপি ল’ (KP Law) কর্তৃক দায়ের করা এই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে জনসন অ্যান্ড জনসন ১৯৬০-এর দশক থেকেই জানত যে তাদের খনিজ-ভিত্তিক ট্যালকম পাউডারে তন্তুযুক্ত ট্যালকের পাশাপাশি ট্রেমোলাইট ও অ্যাকটিনোলাইট রয়েছে। এই দুটি খনিজের তন্তুযুক্ত রূপ অ্যাসবেস্টস হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ, যা প্রাণঘাতী ক্যান্সারের সঙ্গে যুক্ত।
আদালতের নথিতে বলা হয়েছে, এই খনিজগুলোর ক্যান্সারের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও জনসন অ্যান্ড জনসন কখনও তাদের বেবি পাউডারের প্যাকেজিংয়ে সতর্কবার্তা দেয়নি। বরং কোম্পানিটি একটি আগ্রাসী বিপণন প্রচারণা চালায়, যেখানে বেবি পাউডারকে বিশুদ্ধতা ও নিরাপত্তার প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল।
জনসন অ্যান্ড জনসন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং দাবি করেছে যে তারা কখনও ইচ্ছাকৃতভাবে অ্যাসবেস্টসযুক্ত বেবি পাউডার বিক্রি করেনি।
কোম্পানির পক্ষ থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের বেবি পাউডার “সব প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল, এতে কোনো অ্যাসবেস্টস ছিল না এবং এটি ক্যান্সার সৃষ্টি করে না।”
যুক্তরাজ্যে ট্যালকযুক্ত বেবি পাউডারের বিক্রি ২০২৩ সালে বন্ধ করা হয়।
এই যুক্তরাজ্যের মামলা যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক আইনি লড়াইয়ের প্রতিফলন, যেখানে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে এবং বাদীদের বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে কোম্পানিটি সফলভাবে আপিল করেছে।
বাদীদের আইনজীবীরা অনুমান করছেন, যুক্তরাজ্যে দাবিকৃত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ শত শত মিলিয়ন পাউন্ডে পৌঁছাতে পারে এবং এই মামলা ব্রিটিশ ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পণ্য-দায়বদ্ধতা মামলা হয়ে উঠতে পারে।
সূত্র: বিবিসি



